কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো এক যুগ পূর্তি উৎসব পালিত
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শনিবার সারা দিনব্যাপী আবারো পালিত হলো এক যুগ প‚র্তি উৎসব।
গত ৯মে ২০১৮ তে অনাড়ম্বর ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যুগ পালন করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। বিতর্কের মুখে প্রশাসনের বক্তব্য ছিলো শিক্ষার্থীরা চাইলে আবার উদযাপিত হবে এক যুগ প‚র্তি উৎসব।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিত আবারো এক যুগ প‚র্তি উৎসব পালন হলেও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহন চোখে পড়েনি। আজকের এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
বন্ধের দিনে এক যুগ প‚র্তি উৎসব পালনের কারনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই যার ম‚ল কারন হিসেবে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এই উৎসব নিয়ে প্রশাসন কোন প্রচার প্রচারণা করেনি যার ফলস্বরূপ আজকের এই অনুষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গোলাম রব্বানী বলেন, আজ আমরা যে উৎসব দেখলাম তা কোন এক যুগ পুর্তির অনুষ্ঠান মনে হয়নি। মনে হয়েছে পিকনিক স্পটে বাইরের মানুষ ঘুরতে এসেছে আর আমরা তা দেখছি। যেখানে নিজেদের খুব অসহায় মনে হয়েছে। বাইরে থেকে আসা মানুষদের গায়ে যুগ পুর্তির টিশার্ট আর আমরা কেবল দেখছি আর সাত্বনা স্বরূপ প্রাণের সৌজন্য খাবার।
আজকের অনুষ্ঠানে অসহায় মনে হয়ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তাদের। অনুষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আসন না পেয়েও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য অন্যান্য অনুষ্ঠানে আসনের ব্যবস্থা থাকলেও আজ কোন ব্যবস্থা রাখেনি প্রশাসন। এতে ক্ষুব্দ গণমাধ্যমকর্মীরা। আয়োজনের অবস্থায় অসন্তুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে এমনটা প্রত্যাশিত ছিলো না। আজ আনন্দ শোভাযাত্রা, এমনকি অনুষ্ঠানে সংরক্ষিত আসনেও আমরা বসতে পারি নি।
সরেজমিনে এর সত্যতা পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকেও দেখা গেছে শোভাযাত্রার সময় দ্বিতীয় সারিতে। ব্যনারের সবটাই দখলে ছিলো বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের। সংগঠনটির সদস্যদের বহন করা বাসে ব্যানার করে লিখা এটা একযুগ প‚র্তি উৎসব ও ঈদ পুনর্মিলনী হিসেবে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, আমাদের এই আয়োজন খুবই অল্প সময়ের মধ্যে হয়েছে। তাই এমন সংকট হয়েছে। আমরা চেয়েছি ভালো একটি অনুষ্ঠান হোক কিন্তু কিছু কারনে সামান্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে যার প্রভাব পড়ছে তা স্বীকার করেই দুঃখ প্রকাশ করছি।
বিশ্ববিদ্যালয় এর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোঃ মেহেদি জামান লিজন বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অসহায় হিসেবেই দেখেছি। আবারো উদযাপিত হয়েছে ঠিক কিন্তু যাদের জন্য এই আয়োজন মানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ তেমন চোখে পড়ে নি। ছাত্রলীগ এর নেতা-কর্মী ব্যতীত তেমন কোন সাধারন শিক্ষার্থীদের দেখা যায় নি।
উলেখ্য, আজ সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত ও পুষ্পস্থবক অর্পনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এর পরবর্তীতে শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সকাল ১২টা ২০ মিনিটে গাহি সাম্যের গান মঞ্চে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাাফিজুর রহমান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক , টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রনালয় এর মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার,গেস্ট অব অনার হিসেবে ইমেরিটাস প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম সহ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।