যিশুর আগমন আসন্ন :মার্কিন ধর্মযাযক
সম্প্রতি মার্কিন এক খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারক দাবি করেছেন, এই সভ্যতার শেষ সময় আসন্ন। খুব শীঘ্রই পৃথিবীতে যিশু’র আগমন ঘটবে। দিন তারিখ উল্লেখ না করলেও তার দাবি, ব্রিটেন সভ্যতা ধ্বংসের বীজ অন্তত একশ’ বছর আগেই রোপন করেছে। যা বাইবেলসহ বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
ওই ধর্মগুরুর নাম প্রকাশ না করলেও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ইউকে প্রতিবেদনে জানায়, শেষ সময়ের করণীয় ঠিক করতে তিনি ধর্মীয় নেতাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে যিশুর আগমনের পর পৃথিবীর সংকটকালীন সময়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ভূমিকা কি হবে সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়।
খ্রিস্টান ওই ধর্মযাজকের মতে বাইবেলসহ বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ করা মানব সভ্যতার শেষ হওয়ার আলামতের সুত্রপাত করে খোদ ব্রিটেন। তার দাবি, জেরুজালেমের পবিত্র ভূমিতে ঈশ্বরের অভিশাপ পাওয়া ইহুদি জাতিকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্তই ছিল মানব সভ্যতার ইতিহাসে চরম ভুল।
বিতর্কিত বেলফোর ঘোষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯১৭ সালে মুসলিমদের বিতারিত করে ইহুদি জাতিকে সেখানে বসবাসের যে সিদ্ধান্ত ব্রিটেন নিয়েছিল, তাই আজ মানব সভ্যতা ধ্বংসের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্বের বর্তমান হানাহানিকর পরিস্থিতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য ওই ধর্মগুরু ইহুদিদের দায়ী করেন।
ইহুদি সম্প্রদায়ের ইংরেজ নেতা ব্যারন রথচাইল্ডের কাছে ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব আর্থার জেমস বেলফোরের পাঠানো এক চিঠিতে সেই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ ছিল। ইতিহাসে যা বেলফোর ঘোষণা বা Balfour Declaration হিসেবে পরিচিত। যার প্রেক্ষিতে দুনিয়ায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনাও ঘটে।
প্যালেস্টাইনের মতো পবিত্র স্থানে অভিশপ্ত ইহুদি জাতিকে বসবাসের অনুমতি দেয়াই ছিল চরম অধর্মের কাজ বলে মন্তব্য করেন ওই খ্রিস্টান ধর্মযাজক। সেই সময় থেকেই মানব সভ্যতার ধ্বংসের বীজ রোপন হয়ে যায়। কেননা সেই ঘোষণাই ছিল ঈশ্বরের নির্দেশের চরম লঙ্ঘন। কেননা, ‘ঈশ্বর বলেছিলেন অবাধ্য ইহুদি জাতির পৃথিবীতে কোথাও স্থান হবে না।’
তার মতে সেই সময় ব্রিটেনের খ্রিস্টান ধর্মগুরু হিসেবে জনপ্রিয় এফ বি মেয়ার বেলফোর ঘোষণায় বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। বেলফোর ঘোষণার পর পরই তিনি ব্রিটেনের শীর্ষ আইন প্রণেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিদ্ধান্ত পাল্টানোর দাবি জানান।
কারণ তিনি ভালোভাবেই জানতেন, ধর্মে উল্লেখ থাকা ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যে হতে পারে না। তিনি সাবধান করে বলেছিলেন, শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে যে যিশু খ্রিস্ট প্রত্যাবর্তনের আগে ঈশ্বরে অবিশ্বাসী এবং বিশ্বাসঘাতক ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ সেই পবিত্র স্থানে ফিরে যাবে। যা একসময় তাদের স্বদেশ ছিল, কিন্তু ঈশ্বরের অভিশাপেই সেখান থেকে তারা বিতারিত হয়েছিল।
সেই সময় মেয়ার আইন প্রণেতাদের ছাড়াও ব্রিটেনের খ্রিস্টান ধর্ম যাজকদেরও আলোচনার জন্য জরুরী বৈঠক ডাকেন। কিন্তু ইতিহাসকে তিনি পাল্টাতে পারেননি।
ক্রিষ্চিয়ান প্রফেসি নামের একটি ওয়েবসাইটে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাইবেল মতে পৃথিবীতে এমন এক সময় উপস্থিত হবে যখন ইহুদিদের সময় শেষ হয়ে যাবে। সেটি এমন এক সময়, যখন যিশু’র পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত বহন করবে।
ওয়েবসাইটটিতে আরও বলা হয়, বেলফোর ঘোষণার সময়েই একদল খ্রিস্টান ধর্মযাজকেরা নিশ্চিত হয়ে যান যিশুর আগমনের সময় নিকটবর্তী। তারা বিশ শতকের মহাবিপর্যয়ের ঘটনার সুত্রপাতের স্বাক্ষী হন বলেও প্রতিক্রিয়া জানান।
— সংগৃহীত